ঢেঁকুর যেভাবে আপনার সন্তানকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে
আজকের আর্টিকেল টি তে যা থাকছেঃ
- ঢেঁকুর তোলা/বারপিং কেন জরুরি?
- ঢেঁকুর তোলার/বারপিং এর পদ্ধতি গুলো কি কি?
- সারাদিনে কত বার ঢেঁকুর তোলা উচিৎ?
- এই সময় বমি হলে করনীয় কি?
কান্না করা এবং খাওয়ার সময় প্রতিটি নবজাতক এর পেটে কিছু বাতাস প্রবেশ করে যেটা ঠিকমত বের না হলে তার গ্যাসের সমস্যা, বমি হওয়া, পেট ফোলা, প্রচণ্ড অস্থির হয়ে কান্নাকাটি করা এবং অ্যাবডোমিনাল ডিস্টেনশন এর মত বেশ কিছু সমস্যার লক্ষণ দেখা দিতে পারে। আবার অনেক সময় ঘন ঘন হেঁচকি আসতে ও দেখা যায়।
এই পরিস্থিতি এড়াতে ঢেঁকুর তোলার/বারপিং করার গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা, প্রতি বার খাওয়ার শেষে ভিতরে জমা গ্যাস গুলোকে বের করতে পারে এই ঢেঁকুর। এটি খাবার দ্রুত হজমে সাহায্য করে তাই নবজাতকের পেট ফোলা/ব্যাথা হওয়া/ বমি করার আশংকা অনেকাংশে কমে যায়। ফলে, ঠিকমত টয়লেট হওয়া আর নিয়মিত ওজন বাড়ার কারনে সন্তান থাকে সর্বদা হাস্যোজ্জল।
ঢেঁকুর মোট তিনটি উপায়ে তোলা যায়ঃ
১। ওভার দ্যা শোল্ডার টেকনিক/ কাঁধের উপর
২। ওভার দ্যা ল্যাপ/ কোলের উপর
৩। অন দ্যা বেলি / পেটের উপর
বাচ্চাকে খাওয়ানোর পর পরই কাঁধে নিয়ে মা রা একটু হেঁটে বেড়ান এবং পিঠে হাল্কা করে চাপড়/ঘষে দেন এমন দৃশ্য কম বেশি সবার ই পরিচিত। এই পদ্ধতি কেই মূলত কাঁধের উপরের টেকনিক বলে। এটাকে বারপিং এর ট্রেডিশনাল টেকনিক ও বলা হয়।
একই ভাবে আপনি বাচ্চাকে আপনার কোলে বসিয়ে ও ঢেঁকুর তুলতে পারেন। সতর্কতার সাথে বাচ্চা কে আপনার কোলের উপর বসিয়ে এক হাতের তালু বাচ্চার থুতনির নিচে দিয়ে দুই কানের গোড়ালি পর্যন্ত সাপোর্ট দিন। এতে মাথার পুরো কন্ট্রোল আপনার হাত থাকবে । এরপর বাচ্চাকে একটু সামনে পেটের দিকে ঝুঁকিয়ে পিঠে হাল্কা করে চাপড়/ঘষে দিন। এই পদ্ধতি টি প্রথম দিকে কঠিন মনে হলেও বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে সাথে এটাই আপনার পছন্দের হয়ে উঠতে পারে।
পেটের উপড়ের এই পদ্ধতি কে সবচেয়ে সহজ টেকনিক বলেই ধরা হয়। এইক্ষেত্রে থুতনি তে সাপোর্ট দেয়া অবস্থায় বাচ্চাকে বসিয়ে না রেখে আপনার থাই এর উপরে উপুড় করে রেখে পিঠে হাল্কা করে চাপড়/ঘষে দিন। ঢেঁকুর এর আওয়াজ আসা পর্যন্ত ৫/৭ মিনিট চেষ্টা করুন।
কোন কোন বাচ্চার ঢেঁকুর উঠানোর এই সময়ে হাল্কা থুতু/দুধ বের হয়ে আসতে পারে যা একদম স্বাভাবিক। তবে যদি কখনো অনেক বেশি মাত্রায় বমি করে এবং বমির রং হলুদাভ/ সবুজ প্রকৃতির হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
মনে রাখা জরুরিঃ
সন্তান জন্মের পর থেকে বসা অথবা হামাগুড়ি দেয়ার আগে পর্যন্ত প্রতি বার খাওয়ানো শেষে ঢেঁকুর তোলা/ বারপিং অবশ্যই জরুরী।
ব্রেস্টফিডিং/ফর্মুলা ফিডিং এর মাঝে বিরতি দিয়ে এবং খাওয়ার শেষে ঢেঁকুর তোলা সবচেয়ে উত্তম।
ঢেঁকুর তোলার পাশাপাশি পায়ুপথ দিয়ে গ্যাস বের করতে বাচ্চার পেটে ম্যাসাজ/পায়ে সাইকেলিং মুভমেন্ট ও করাতে পারেন।
Disclaimer: এই ইনফরমেশন গুলোর উদ্দেশ্য হলো স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানো। তবে কোনো ভাবেই চিকিৎসার বিকল্প নয়। জানুন বুঝুন এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিন। আমাদের লেখায় যদি কোনো তথ্যগত ভুল বা বিভ্রান্তি থাকে তাহলে আমাদের ইনফর্ম করে ইম্প্রোভ করার সুযোগ করে দিন। যোগাযোগ: [email protected]
Share your comment :